বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:তথ্য বলছে, রাজ্যে করোনা পরীক্ষা বেড়েছে। অঙ্কের হিসেবে তাই সংক্রমিতের সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। রবিবার মোট ১৩ হাজার ৮৭১ জনের করোনা পরীক্ষা হয়। করোনা–কালে পশ্চিমবাংলায় এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা পরীক্ষা। এই হিসেবে শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ২৭৮ জন। ফলে রাজ্যে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ৪২ হাজার ৪৮৭ জন। যদিও এই মুহূর্তে কোভিড–১৯ ভাইরাস সক্রিয় রয়েছে ১৬ হাজার ৪৯২ জনের শরীরে। এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন থেকে।
এদিনও যাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কলকাতারই সবচেয়ে বেশি মানুষ। কলকাতার ৬৬২ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। মহানগরীতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৩৪৪ জন। কলকাতার পর রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। এই জেলার ৫৪৪ জন এদিন সংক্রমিত হন। তৃতীয় স্থানে রয়েছে হাওড়া। এদিন এই জেলায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৯১ জন। এর পরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৫২ জন। দক্ষিণ দিনাজপুরে এদিন সংক্রমিত হয়েছেন ১৪২ জন। মালদায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮৯ জন। হুগলির ৮৫ জন এদিন সংক্রমিত হন। এদিনের বুলেটিন থেকে আরও জানা গিয়েছে, শেষ ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। করোনা–সময়ে এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে সরকারি হিসেবে এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু। ফলে করোনা সংক্রমিত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১১২ জন।
এদিন যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কলকাতার ১৫ জন, উত্তর ২৪ পরগনার ৯ জন, হুগলির ৪ জন, হাওড়ার ৩ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩ জন, পশ্চিম মেদিনীপুরের ১ জন, পূর্ব মেদিনীপুরের ১ জন রয়েছেন। তবে এর মধ্যে একটা স্বস্তির খবর হল, এদিন সারা রাজ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৩৪৪ জন। সুস্থ হওয়ার এই সংখ্যাই আপাতত অনেককেই কিছুটা হলেও আশায় রেখেছে। তবে সুস্থতার হার কিন্তু বাড়েনি। এদিন পর্যন্ত রাজ্যে সুস্থতার হার ৫৮.৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে, কলকাতা–সহ বাংলার জেলাগুলিতে করোনায় সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দৈনিক বা মোট করোনা পরীক্ষার সংখ্যায়ও তারা খুশি নয়। দৈনিক পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারকে। উল্লেখ্য, গোটা রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৭ লক্ষ ৩ হাজার ২৮৪টি। তার মানে প্রতি ১০ লক্ষে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৭ হাজার ৮১৪ জনের।
এদিকে, রাজ্যে সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যা বাড়িয়ে দিল সরকার। নতুন করে আরও ৬৩টি কন্টেনমেন্ট জোন বাড়ানো হয়েছে। ফলে রাজ্যে এখন মোট কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যা হয়েছে ৭৩৯টি। এর আগে কন্টেনমেন্ট জোন ছিল ৬৭৬টি। জানা গিয়েছে, এই জোনগুলিতে কোভিড–১৯ ভাইরাস সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বেশি। এই জোনগুলিতে পুরোপুরি লকডাউন জারি থাকবে। এই জোনের কোনও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা অফিস–কাছারি খোলা রাখা যাবে না। যদি কোথাও রাখা হয়, তা হলে তা রাখা হবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। তবে সে ক্ষেত্রে সেই সিদ্ধান্ত প্রশাসন নেবে এবং সে কথা সেই নির্দিষ্ট জোনগুলির বাসিন্দাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।